চলে গেলেন সত্তর দশকের বাংলা ভাষার বহুল আলোচিত নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৭৩ বছর।
শনিবার রাতে জার্মানির বার্লিনের একটি বৃদ্ধাশ্রমে তার মৃত্যু হয়।
দাউদ হায়দারের ভাই কবি জাহিদ হায়দার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাংলাদেশ সময় রাত দেড়টার দিকে দাউদ হায়দার মারা গেছেন।
দাউদ হায়দারের জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলায়। তিনি একাধারে কবি, লেখক ও সাংবাদিক। সত্তর দশকের শুরুর দিকে দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতার সম্পাদক ছিলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে লন্ডন সোসাইটি ফর পোয়েট্রি তার এক কবিতাকে ‘দ্য বেস্ট পোয়েম অব এশিয়া’ সম্মানে ভূষিত করে।
১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় দাউদ হায়দারের কবিতা ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ প্রকাশিত হলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে তার বিরূদ্ধে মামলা হয়। তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে ১১ মার্চ তাকে আটক করে পুলিশ। ২০ মে সন্ধ্যায় জেল থেকে মুক্তি দিয়ে পরদিন কলকাতাগামী একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাকে তুলে দেওয়া হয়। ওই ফ্লাইটে আর কোনো যাত্রী ছিলেন না। তারপর ভারত সরকারও তাকে বহিষ্কার করে। নোবেল বিজয়ী জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের বিশেষ চেষ্টায় ১৯৮৭ সালে জার্মানিতে আশ্রয় নেন দাউদ হায়দার।
বার্লিনে কবির অত্যন্ত স্নেহভাজন, সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পী মাইন চৌধুরী পিটু বলেন, কবি দাউদ হায়দার গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অসুস্থতাজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। সে কারণে বেশ কয়েক মাস জার্মানির বেশ কয়েকটি হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে কবির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
মাইন চৌধুরী বলেন, কবির মরদেহ বার্লিনেই দাফন করা হবে। তবে তার শেষ বিদায় কোথায় এবং কখন হবে তা দেশে থাকা কবির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং বার্লিনে তার ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।