আজ সকালে চায়ের কাপ হাতে যখন আমরা সংবাদে চোখ বুলাচ্ছি, তখন এক ধরনের প্রশ্ন অনবরত মনে আসে: “আজকের সংবাদ আমাদের কী বলছে?” দেশের প্রধান সংবাদ মাধ্যমগুলো কি সত্যিই সমাজের বিভিন্ন কোণ থেকে খবর নিয়ে আসে, না কি তারা শুধুমাত্র একদিকের ঘটনা তুলে ধরে?
আজকের দিনে মিডিয়ার ভূমিকা শুধু খবর দেওয়া নয়, বরং সত্যতা যাচাই করা এবং জনগণকে সচেতন করা।
আজকাল, অধিকাংশ সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল এবং অনলাইন পোর্টাল রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সুবিধার দিকে ঝুঁকে পড়ে। সংবাদে পেশাগত মান এবং নিরপেক্ষতা অনেক সময় প্রশ্নবিদ্ধ হয়। আমরা দেখতে পাই, সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা হলে সংবাদগুলি হয় বেশি ভারসাম্যহীন বা অযৌক্তিকভাবে কঠোর। অন্যদিকে, রাজনৈতিক পক্ষের সমর্থনে প্রচুর অনুকূল সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এটি যদি চলতে থাকে, তবে আমাদের জানা তথ্যের শুদ্ধতা নিয়ে ভাবনাও আরো জটিল হয়ে উঠবে।
আমরা সবসময় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু চোখ বুলালে দেখতে পাই কীভাবে কিছু ভুয়া খবর প্রচারিত হচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়ার মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এখন পোর্টালগুলো খুব দ্রুত খবর ছড়িয়ে দেয়। তবে এর সাথে বড় একটা সমস্যা হলো—ভুয়া খবরের প্রসার।
বেশিরভাগ সময় আমরা দেখে থাকি, অনলাইন সংবাদভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট বা ব্লগে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়। এতে জনগণের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
আজকের যুগে সংবাদ গ্রহণের ক্ষমতা শুধু মিডিয়ার নয়, সাধারণ জনগণেরও হওয়া উচিত। আমরা যদি নিউজের উৎস যাচাই না করি, তবে সেটি আমাদের জীবনে মিথ্যা প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য মিডিয়া শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে।
আমাদের উচিত, মিডিয়া শিক্ষার মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা যাতে তারা সহজেই বুঝতে পারে কোন তথ্য সত্যি, কোনটা মিথ্যা বা মনগড়া।
গণমাধ্যমের অন্যতম প্রধান কাজ হলো জনগণকে সঠিক তথ্য দেওয়া, বিশেষ করে এমন সময় যখন আমাদের জীবন, সমাজ ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।
আমরা যে মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর বিশ্বাস করি, সেটি যদি ভুল হয়, তা আমাদের সমাজ ও রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য মিডিয়ার কাছে আরো অনেক বেশি জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা প্রয়োজন।
আজকের দিনটি হোক মিডিয়ার প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধের নতুন শুরু। সংবাদ পড়ার সময়, মনে রাখুন—সব খবর সত্যি নয়, তবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সত্য খোঁজা। আসুন, একসাথে মিডিয়াকে আরো নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং সত্যনিষ্ঠ করি।
মিডিয়াতে নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার ক্ষেত্রে আপনি কী মনে করেন? আমাদের সাথে শেয়ার করুন এবং #মিডিয়াচেতনা হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন।