Friday, August 1, 2025
১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্যপ্রাপ্ত

>> সীমান্তে হত্যা বন্ধ না হলে লং মার্চের হুঁশিয়ারি দিলেন নাহিদ ইসলাম

>> ‘ফেব্রুয়ারিতে আপত্তি নেই, তবে যেনতেন ভোট চায় না জামায়াত’: আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের

>> ইসলামিক এনজিওকে সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার

>> রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে বন্ধ থাকবে গ্যাস

>> তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের পথ বের করতে হবে: মির্জা ফখরুল

>> গুমে সেনাসদস্যরা সংশ্লিষ্ট থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাসদর

>> সাধারণ ক্ষমার সীমা নির্ধারণ ও বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠনে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

>> নারী এশিয়ান কাপে ঐতিহাসিক সাফল্য

>> বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে কেএনএ কমান্ডারসহ নিহত ২

>> ঢাকাসহ যেসব অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির আভাস

আপনি পড়ছেন : Media Development

বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলবাণিজ্যে ভারতের নতুন বিধিনিষেধ


ডেস্ক রিপোর্ট
2025-05-18 ০৬:২৯ পিএম
বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলবাণিজ্যে ভারতের নতুন বিধিনিষেধ
ছবি:সংগৃহীত

স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদপণ্যসহ অন্তত সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত, যা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের পণ্য রপ্তানিতে বড় ধরনের জটিলতা তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) শনিবার এই নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করে।

সেখানে বলা হয়, কোনো স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কোনো ধরনের পোশাক পণ্য ভারতে ঢুকতে পারবে না।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক এখন থেকে কেবল কলকাতা ও মুম্বাইয়ের নভসেবা (জওহরলাল নেহরু) সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে।

ফল, ফলের-স্বাদযুক্ত পানীয় ও কার্বোনেটেড ড্রিংকস; বেকারি, চিপস, স্ল্যাকস এবং কনফেকশনারিতে তৈরি প্রক্রিয়াজাত খাবার; তুলা ও সুতার ঝুট; পিভিসিসহ বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য এবং কাঠের তৈরি আসবাবপত্রও বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছে।

আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের কোনও ‘ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন’ বা ‘ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট’ (আইসিপি) দিয়ে এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন দিয়ে এসব পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে পারবে না।

তবে বাংলাদেশ থেকে মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল ও পাথর আমদানি অব্যাহত রাখছে ভারত। এছাড়া ভারতের ওপর দিয়ে নেপাল কিংবা ভুটানে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানিও অব্যাহত থাকবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর যে চড়া শুল্ক আরোপ করেছে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারত তার চেয়েও কঠোর পদক্ষেপ নিল।

বিজিএমইএ এর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “এখন সমুদ্রপথে ভারতের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পণ্য পাঠাতে গেলে আগের থেকে আরো বেশি সময় লাগবে, খরচও বাড়বে। তার মানে এক্সপোর্ট কিছুটা হলেও কমার ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাব।”

বিশেষ করে ছোট রপ্তানিকারকরা এই নিষেধাজ্ঞার কারণে বেশি সমস্যায় পড়বেন, কারণ অল্প পরিমাণ পণ্য সমুদ্রপথে পাঠাতে গেলে তা লাভজনক হয় না।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের-এনবিআর তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৭ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি করে; গত অর্থবছরে তা প্রায় অপরিবর্তিত ছিল।

অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করেছে ১৭ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে রপ্তানি হয়েছে ১১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকার পণ্য।

যেসব দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে, তার মধ্যে ভারত একটি, যেখানে প্রতিবছর প্রায় ৭০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়।

এর মধ্যে ৯৩ শতাংশের মত পোশাক পণ্য স্থলপথেই রপ্তানি হয়। ফলে ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা এ খাতের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দেখা দেবে বলে ব্যবসায়ীদের শঙ্কা।

ভারতের ইংরেজি পত্রিকা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড লিখেছে, ভারতের এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বাণিজ্য টানাপোড়েন আরও তীব্র আকার ধারণ করল।

প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।

অন্যদিকে গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। এখন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরো কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করল প্রতিবেশী দেশটি।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের ১১টি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য হয়। এগুলোর মধ্যে আসামে তিনটি, মেঘালয়ে দুটি ও ত্রিপুরায় ছয়টি বন্দর রয়েছে।

ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানি গত কয়েক বছর ধরে বাড়ছিল। এখন ওই এলাকার সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা করাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

ভারত এর আগে গত মাসের শুরুতে তৃতীয় দেশে রপ্তানি পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলো। এরপর বাংলাদেশও স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সূতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছিলো।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন স্থলবন্দর ব্যবহারে বিধিনিষেধ প্রয়োগের এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে তাতে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি আরও জটিল ও বাধাগ্রস্ত হবে। যদিও এতে ভারতীয় আমদানিকারকরাও ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে তারা কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন।