শনিবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান মনসুর ও ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান।
সভায় ড. আহসান মনসুর বলেন,
রাজনৈতিক বিবেচনায় আর কোনো নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হবে না।তিনি বলেন, “অতীতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে ব্যাংক খাতকে ধ্বংস করা হয়েছে। ভাই, বোন, স্ত্রী কিংবা নেতাদের ব্যাংকের চেয়ারম্যান হওয়ার সংস্কৃতি আর চালু হতে দেওয়া যাবে না।”
তিনি বলেন, “আইএমএফ-এর অর্থ ছাড়াই বাংলাদেশ চলতে পারে। আমাদের এখন প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। আইএমএফের সঙ্গে মতানৈক্য খুবই কম বিষয়ে রয়েছে। তারা মূলত আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। প্রযুক্তি, কৌশলগত পরিকল্পনা ও টেকনিক্যাল সাপোর্টে তারা সহায়তা করছে।”
তিনি আরও জানান, ব্যাংক খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে কয়েকটি রুগ্ন ব্যাংককে একীভূত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
“সাত-আটটি ব্যাংক একসঙ্গে মার্জ করার নজির বিশ্বে খুব একটা নেই। তাই এই বিষয়ে আমরা আইএমএফের পরামর্শ নিচ্ছি”।
মার্জ করা ব্যাংকগুলো ভবিষ্যতে ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন,
“প্রবাসীসহ দেশের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের কাছে এসব ব্যাংকের মালিকানা হস্তান্তর করা হবে। তবে তার আগে ব্যাংকগুলোকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করা হবে। কারণ এগুলো বন্ধ করে দিলে সরকারের আর্থিক ক্ষতি আরও বেড়ে যাবে।”
রাজনৈতিক প্রভাব বা চাপের মধ্যে আছেন কি না—এই প্রশ্নের জবাবে গভর্নর সাফ জানান,
“কোনো রাজনৈতিক চাপ নেই। ব্যাংকগুলো এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। হরিলুটের সংস্কৃতি বন্ধ হয়েছে। ব্যাংক যাতে কোনো পরিবারের দখলে না থাকে, সে জন্য আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমি গভর্নর থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক পরিচয়ে কেউ ব্যাংকের মালিক হতে পারবে না।”
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েও বক্তব্য দেন গভর্নর। তিনি জানান,
“ব্রিটেনে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে টাস্কফোর্স কাজ করছে। কয়েকশ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক ল ফার্ম হায়ার করেছি। তারা আমাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেবে। অর্থ আদায়ে সফল হলে, তাদের নির্ধারিত একটি অংশ কমিশন হিসেবে দেওয়া হবে।”