বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে শাহবাগে মানববন্ধন করেছে ‘প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট নেটওয়ার্ক’।
বুধবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ‘নো ট্যাক্স অন এডুকেশন’, ‘শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ নয়’, ‘অবিলম্বে ১৫% কর বাতিল কর’– এমন স্লোগানসংবলিত পোস্টার হাতে নিয়ে করের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
তাদের দাবিগুলো হলো:
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কীভাবে মুনাফা করে, তা তদন্ত করে অবৈধ আয় বাজেয়াপ্ত করা এবং শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি কমানো। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি নির্ধারণে শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্রপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিটি করে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করা এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান এবং উচ্চশিক্ষার শর্ত পূরণে ইউজিসি ও সরকারের কার্যকর ভূমিকা পালন করা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশে পর্যাপ্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় লাখো শিক্ষার্থী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে বাধ্য হন। এই কর কার্যকর হলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা থেকে আরও দূরে সরে যাবেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, যদিও বলা হচ্ছে এই কর শিক্ষার্থীদের ওপর চাপবে না, বাস্তবে করের ভার বহন করতে হবে তাদেরই , কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তা টিউশন ফি বাড়িয়ে আদায় করবে।
আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, “শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ করা চলবে না। দাবি মানা না হলে আমরা বৃহত্তর ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব।”
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন নেটওয়ার্কের সংগঠক নাবিন আবতাহির, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসফিরুল কাব্য, ইউল্যাবের ফাত্তাহ সিয়াম ও তারমিন তিশা।
২০০৭ ও ২০১০ সালে এনবিআর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫% কর আরোপ করে। এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক রিটের পর ২০১৬ সালে হাইকোর্ট এই করকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং আদায়কৃত অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে একই বছরের সেপ্টেম্বরে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে।
২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে বলা হয়, ১৫% কর আরোপ সংক্রান্ত দুটি প্রজ্ঞাপন বৈধ এবং বহাল থাকবে।