Friday, October 31, 2025
১৬ কার্তিক ১৪৩২

সদ্যপ্রাপ্ত

>> গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীনতা

>> সীমান্তে হত্যা বন্ধ না হলে লং মার্চের হুঁশিয়ারি দিলেন নাহিদ ইসলাম

>> ‘ফেব্রুয়ারিতে আপত্তি নেই, তবে যেনতেন ভোট চায় না জামায়াত’: আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের

>> ইসলামিক এনজিওকে সামাজিক ব্যবসায় এগিয়ে আসার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার

>> রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে বন্ধ থাকবে গ্যাস

>> তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের পথ বের করতে হবে: মির্জা ফখরুল

>> গুমে সেনাসদস্যরা সংশ্লিষ্ট থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাসদর

>> সাধারণ ক্ষমার সীমা নির্ধারণ ও বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠনে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

>> নারী এশিয়ান কাপে ঐতিহাসিক সাফল্য

>> বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে কেএনএ কমান্ডারসহ নিহত ২

আপনি পড়ছেন : Media Monitoring

শ্রমিক স্বাস্থ্য কার্ড ও আবাসন তহবিল চালুর সুপারিশ


স্টাফ রিপোর্টার
2025-04-26 ১:৪০ এএম
 শ্রমিক স্বাস্থ্য কার্ড ও আবাসন তহবিল চালুর সুপারিশ
ছবি:সংগৃহীত

শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য শিল্পাঞ্চলে হাসপাতাল স্থাপন ও ‘শ্রমিক স্বাস্থ্য কার্ড’ চালুর সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। এ ছাড়া স্বল্পমূল্যে আবাসন নিশ্চিতে ‘শ্রমিক আবাসন তহবিল’ গঠনের পাশাপাশি স্বল্পসুদে গৃহঋণ ও আবাসন ভর্তুকির জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে কমিশন।

কমিশন বলেছে,রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা ইপিজেডের জন্য যদি আলাদা শ্রম আইন করতেও হয়, তবে সেটি যেন সাধারণ শ্রম আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়

সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বাধীন শ্রম সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করা হয়েছে।


রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গত রবিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয় ১৮ সদস্যের শ্রম সংস্কার কমিশন। ‘শ্রম জগতের রূপান্তর-রূপরেখা: শ্রমিক অধিকার, সুসমন্বিত শিল্প সম্পর্ক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে মোট ২৫টি সুপারিশ রয়েছে।

শ্রম সংস্কার কমিশন বিভিন্ন খাতের শ্রমিকের মজুরি তিন বছর পরপর মূল্যায়ন ও পুনর্নির্ধারণ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মজুরি না দিলে ক্ষতিপূরণ, মূল্যস্ফীতির ভিত্তিতে বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের জন্য আপৎকালীন তহবিল, ট্রেড ইউনিয়ন করার শর্ত শিথিল, স্থায়ী কাজের জন্য আউটসোর্সিং নিয়োগ বন্ধ, নারী শ্রমিকের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস, স্থায়ী শ্রম কমিশন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছে।


শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসা, সঠিক পরামর্শ ও সেবা নিশ্চিতের সুপারিশ করেছে কমিশন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমিকের প্রয়োজন বিবেচনায় হাসপাতালে বিনা মূল্যে সন্ধ্যাকালীন সেবা থাকতে হবে। শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য শ্রমিক স্বাস্থ্য কার্ড চালু করতে হবে, যা তাঁদের স্বাস্থ্যতথ্য ও প্রাপ্য সুবিধাদি গ্রহণে সাহায্য করবে; পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা টোল ফ্রি টেলিমেডিসিন সেবা দিতে হবে, যাতে শ্রমিকেরা যেকোনো সময় স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পরামর্শ নিতে পারেন। এ ছাড়া শ্রমিকেরা যাতে কম খরচে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারেন, সে জন্য সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যবিমা চালু করার সুপারিশ করেছে কমিশন।


স্বল্পমূল্যে আবাসন নিশ্চিতে ‘শ্রমিক আবাসন তহবিল’ গঠনের পাশাপাশি স্বল্পসুদে গৃহঋণ ও আবাসন ভর্তুকির জন্য বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে।

এছাড়াও সকল কর্মস্থল বা অঞ্চলভিত্তিক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বা ডে-কেয়ারের ব্যবস্থা চালু করতে আইন সংশোধনের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।


শিশুশ্রম নিরসনে রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে কর্মে নিয়োজিত হওয়ার বয়স ১৬ বছরে উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর–তরুণদের এমন কাজে নিয়োগের সুযোগ থাকা উচিত, যা তাদের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়ক।


প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যেকোনো শিল্প খাত, বিশেষায়িত শ্রম অঞ্চল, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক এবং কাজের ধরন–নির্বিশেষে সব শ্রমিকের জন্য সমানভাবে শ্রম আইনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে বিদ্যমান শ্রম আইনের ব্যাপক সংস্কার অথবা নতুন ও সমন্বিত এক বা একাধিক শ্রম আইন প্রণয়ন করতে হবে। শ্রম আইনের সর্বক্ষেত্রে ‘মালিক’ শব্দের পরিবর্তে ‘নিয়োগকারী’ শব্দটি ব্যবহার করতে হবে।


রাইড শেয়ার করা চালকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে শ্রম অধিকার, ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে কমিশন।


এসব সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা কোনো অবাস্তব সুপারিশ করিনি। সব শ্রমিকের জন্য ন্যূনতম সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করেছে কমিশন।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুরুতে কোন কাজগুলো বাস্তবায়ন করা যায় এবং কোন মন্ত্রণালয় কীভাবে সেগুলো করতে পারে, তার একটি রূপরেখা আমরা দেব।